সমীর হালদার, যুক্তরাজ্য
সারাদেশের হিন্দু শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে রাষ্ট্র সংস্কারের নামে। বাংলাদেশের স্কুল কলেজের প্রধান পদগুলোতে সব হিন্দু শিক্ষকরা কেন বসে আছে সেটা কয়েকবছর ধরে মৌলবাদীরা বলে আসছিল। ফলে মৌলবাদীদের স্বাধীনতার পর এর সংস্কার হচ্ছে। এই পদগুলোতে যারা বসেছিল তারা হিন্দু বলে বসেছিল না। তাদের চেয়ে যোগ্য কেউ ছিল না বলেই বসেছিল।
তাজউদ্দীন কন্যা শারমিন আহমেদ তার নেতা ও পিতা বইতে লিখেছেন ৬৪ সালে হিন্দুদের উপর রাষ্ট্রীয় হুলিয়া নেমে আসার পর হিন্দু শিক্ষকরা ভারতে প্রাণ হাতে নিয়ে পালান। শারমিন স্কুলে গিয়ে দেখে দুজন মুসলিম শিক্ষক ছাড়া আর কেউ নেই। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বড় ক্লাসে হিন্দুরা ছিল বেশি। ফলে ক্লাসগুলো ছিল ফাঁকা! মুসলমানদের মধ্যে লেখাপড়ার হার তখনও কত কম ছিল এটা তার একটা দলিল।
প্রফেসর আবদুর রাজ্জাক সাহেব ইন্টারভিউতে বলে গিয়েছেন, দেশভাগের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছিল শিক্ষকদের অভাবে। কারণ শিক্ষকদের ৯৯ ভাগই ছিল হিন্দু। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিলেত থেকে শিক্ষক আনতে লবিং করতে হয়েছিল। দেশভাগের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতজন শিক্ষক ও ভিসি ব্রিটিশ ছিলেন গুগল করতে পারেন!
এত কথা বললাম এজন্য দেশের শিক্ষা ধ্বংস হয়ে পড়বে এভাবে হিন্দু ধরে ধরে শিক্ষক পদত্যাগ করানো হলে। মুসলমানরা নিজেদের দেশ পাওয়ার পরও এখনো শিক্ষায় মেধায় পিছনে আছে।
দেশের শিল্পখাতে ভারতীয় ও শ্রীলঙ্কান ইঞ্জিনিয়ার ছাড়া একদম অচল। কোটা বিরোধী মেধাবীদের যদি মেধা থাকতো তাহলে ভারতীয়দের মোটা বেতনে ভারত বিরোধী একটা দেশ হায়ার করে আনতো না।
মানুষের ধর্ম দেখে তাকে বিচার করার নাম বুঝি নতুন স্বাধীনতা?
এই দেশের শতবর্ষের পুরোনো স্কুল কলেজের যত নাম পাবেন সব হিন্দু নামে। এগুলো হিন্দু জমিদার বণিকদের বানানো। সেই স্কুলে লেখাপড়া করেই বাঙালি মুসলমানদের প্রথম ইংরেজি শেখা মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্ম হয়। আজ তাদের উত্তরপুরুষরা হিন্দু শূন্য করতে স্কুল কলেজে পদত্যাগ চেষ্টা চালাচ্ছে!