Opinion Politics

নবী মোহাম্মদের হাস্যকর মিরাজ ইতিহাস

সমীর হালদার

নবী মুহাম্মদ যখন ইসরা বা মেরাজে যান, অনেক ইসলামিক রেফারেন্সেই দেখা যায়, উনি সেই রাতে অবস্থান করছিলেন উম্মে হানী নামক এক নারীর বাসায়। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, কে ছিলেন এই নারী? এবং নবী মুহাম্মদই বা কেন এই নারীর গৃহে সেই রাতে অবস্থা করছিলেন? সেই রাতে নবী মুহাম্মদ এবং উম্মে হানীর সাথে আর কে কে ছিল? নবী মুহাম্মদের সাথে তার সম্পর্কই বা কী ছিল? ইসলামের কঠোর এবং কঠিন বিধান অনুসারে, স্বামী বা আপন ভাই ছাড়া আর কারো সাথে মেলামেশা, দেখা সাক্ষাত, ইত্যাদি একজন সাচ্চা মুমিনের জন্য সম্পূর্ণ গর্হিত কাজ। যাদের সাথে বিবাহ বৈধ, তাদের সাথে মেলামেশা, দেখাসাক্ষাৎ এমনকি কথাবার্তাতেও রয়েছে নানাবিধ নিষেধাজ্ঞা। অথচ, ইসলামের রেফারেন্সেই দেখা যায়, বিবাহ বৈধ এমন নারীর বাড়িতে নবী রীতিমত রাত্রিযাপন করতেন। মুসলিমদের পক্ষ থেকে অনেকে যুক্তি দেখাবেন, তখনো পর্দার বিধান নাজিল হয় নি, তাই নবী এমনটি করেছেন। কিন্তু পর্দার বিধান নাজিলের পরেও নবী একইভাবে উম্মে হানীর সাথে দেখাসাক্ষাৎ করেছেন। মেলামেশা খানাপিনা সবই করেছেন। আবার, ইসলামের প্রাথমিক সময়েও কোন বিষয়ের বিধান নাজিলের আগেও নবী কোন হারাম কাজ করেছেন, অনেক ইসলামিক স্কলারই তা স্বীকার করেন না। যেমন, অধিকাংশ ইসলামিক স্কলার মনে করেন, কোরআন নাজিলের পূর্বেও নবী কখনো জিনা করেন নি, মদ খান নি, মূর্তি পুজাও করেন নি। তাহলে ধরে নিতে হচ্ছে, কোরআনে পর্দার বিধান নাজিলের আগেও তিনি বিবাহ বৈধ এমন নারীর সাথে মেলামেশাও করেন নি। তাহলে উম্মে হানীর সাথে তার সম্পর্ক কী ছিল, সেই প্রশ্নের জবাবে অনেক ইসলামিক স্কলারই বলে থাকেন, উম্মে হানীকে নবী নিজের বোনের মত মনে করতেন। নাস্তিকরা নাকি বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ, যারা ভাই বোনের এই পবিত্র সম্পর্ক নিয়ে কুৎসা রটনা করে!

কিন্তু আসলেই কী তার সাথে নবীর ভাইবোনের মত সম্পর্ক ছিল? সেই বিষয়েই আজকের আলোচনা। পাঠকগণ ইসলামিক রেফারেন্সগুলো পর্যালোচনা করবেন, এবং নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেবেন, উম্মে হানীর সাথে নবী মুহাম্মদের সম্পর্ক ভাইবোনের পবিত্র সম্পর্ক ছিল, নাকি পুরোটাই শরৎচন্দ্রের দেবদাসের মত এক অতৃপ্ত প্রেমের গল্প ছিল।

উম্মে হানী কে ছিলেন?

উম্মে হানীর আসল নাম ছিলো ফাখিতা বা ফাকিতাহ্‌ মতান্তরে হিন্দ। তিনি ছিলেন মুহাম্মদের আপন চাচা আবূ তালিবের কন্যা। তার পিতার নাম আবূ তালিব ইবনে আবদুল মুত্তালিব ও মাতার নাম ছিলো ফাতিমা বিনতে আসাদ। তিনি জাফর, আকিল ও ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলীর বোন ছিলেন। মুহাম্মদের পিতামাতার মৃত্যুর পরে সে প্রথমে দাদা আবদুল মুত্তালিব এবং পরে চাচা আবূ তালিবের কাছে আশ্রিত হিসেবে থাকেন। চাচাতো ভাই-বোনদের সাথে ছোটবেলা থেকেই তিনি একসাথে বড় হয়েছেন। উল্লেখ্য, সেই সময়ে সেই অঞ্চলে চাচাতো ভাইবোনদের মধ্যে বিবাহ খুব একটি খারাপ বিষয় বলে মনে করা হতো না। একে অজাচার হিসেবেও চিহ্নিত করা হতো না। কোরআনেও চাচাতো ভাইবোন বা ফার্স্ট ব্লাড কাজিনদের মধ্যে বিবাহ এবং যৌন সম্পর্কের বিষয়টিকে হালাল করা হয়েছে। বর্তমান বিশ্বে যা ক্ষতিকর বলে চিহ্নিত করা হয় এবং যেই কাজটি নিরুৎসাহিত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *