বীপেন রাজবংশী, যুক্তরাজ্য
ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক নবী মুহাম্মদ মক্কা, মদিনা ও অন্যান্য অঞ্চলে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছেন। অসংখ্য মানুষকে তিনি বানিয়েছেন দাস দাসী, দখল করেছেন তাদের জায়গা সম্পত্তি, যুদ্ধবন্দীদের হত্যা এবং তাদের ক্রীতদাস দাসী বানানো ছাড়াও তার অপরাধের পরিমাণ বিপুল। এমনকি, কাফের নারীদের স্বামী ভাই পিতাদের হত্যা করে তাদের গনিমতের মাল নাম দিয়ে সেইসব ক্রীতদাসীদের সাথে যৌন সংগম করেছেন, সাহাবীদেরকেও করতে উৎসাহ দিয়েছেন। তার ভয়ংকর জিহাদের কবলে ঘরবাড়ি হারিয়েছে অনেক মানুষ, স্বজনকে লাশের পাহাড় আর অমুসলিমদের উপাসনালয়ের ধ্বংসস্তুপের মধ্যে ইসলামের নবী গড়ে তুলেছেন তার ইসলামী সাম্রাজ্য। এতকিছু করেও তার মৃত্যু কিন্তু খুব সুখকর হয় নি। তার মৃত্যু হয়েছিল অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং যন্ত্রণাকাতর। এতকিছু করেও তার মৃত্যু কিন্তু খুব সুখকর হয় নি। তার মৃত্যু হয়েছিল অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং যন্ত্রণাকাতর। সেটি কেন, এবং কীভাবে হয়েছিল তার বিবরণ।
সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়, নবী মুহাম্মদের আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস এবং আস্থা থাকবার পরেও, জিবরাইলের মত শক্তিমান ফেরেশতা এবং আরও হাজারো ফেরেশতা বাহিনী তার সাথে থাকবার পরেও, তিনি শত্রুদের ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারতেন না। উনার পাহারাদার লাগতো, কারণ তিনি ভয় পেতেন কেউ এসে তাকে খুন করে যেতে পারে।
একের পর এক ইহুদী গোত্র ভিটেমাটি ছাড়া করা এবং কয়েকটি ইহুদী গোত্রের ওপর নৃশংস গণহত্যা চালাবার কারণে ইহুদী গোত্রসমূহ নবী মুহাম্মদের ওপর ভীষণ ক্ষিপ্ত ছিল। বিশেষ করে বনূ কুরাইযা গোত্রের ৬০০-৯০০ পুরুষকে একদিনে হত্যা করায় তারা ব্যাথিত ছিল, তারা প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছিল। কিন্তু সংখ্যা এবং শক্তিতে কম হওয়ায় তারা কিছুই করতে পারছিল না। খায়বারে আক্রমণের সময় নবী মুহাম্মদ যয়নব বিনতে হারিস নামক এক ইহুদী নারীর বাসায় খাবার খেয়েছিলেন। সেখানে তাদেরকে বিষযুক্ত ভেড়ার মাংশ খেতে দেয়া হয়। মাংশের সামান্য অংশ নবী মুহাম্মদও মুখে দিয়ে ফেলেছিলেন । কিন্তু একজন সাহাবীর মৃত্যুতে তিনি মুখে থাকা খাবারের অংশ ফেলে দেন এবং ইহুদী নারীকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি খাবারে বিষ মিশিয়েছেন কিনা। ইহুদী নারীটি উত্তর দেয়, আপনি যদি সত্যি নবী হয়ে থাকেন তাহলে আমি যা করেছি তাতে এই বিষে আপনার ক্ষতি হবে না। আর যদি আপনি কেবল আক্রমণকারী হয়ে থাকেন তাহলে আমি আপনার থেকে মানুষকে শান্তি দিলাম।
নবী মুহাম্মদ যে বিষ খানিকটা মুখে দিয়ে ফেলেছিলেন, সেটি যে তার শরীরে প্রবেশ করেছিল এবং তার শারীরিক ক্ষতি হয়েছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায় আরেকটি সহিহ হাদিসে। তার শরীরে পরিষ্কার বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা দিয়েছিল।
নবী মুহাম্মদ এই বিশাল মহাবিশ্বের স্রষ্টা সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাকের প্রেরিত রাসুল এবং ফেরেশতা-জ্বীন-ইনসান সকলের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বলে নিজেকে দাবী করার পরেও, তার আল্লাহ, ফেরেশতা বাহিনী, জ্বীন বাহিনী, কেউই তাকে খায়বারের সেই বিষযুক্ত ভেড়ার মাংশ বিষয়ে এতটুকু সাবধান করে নি। বিষয়টি খুবই সন্দেহজনক।
এবারে আসুন দেখি, মহাবিশ্বের স্রষ্টা সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাকের সর্বাপেক্ষা প্রিয় মানুষ, সর্বাপেক্ষা প্রিয় রাসুল নবী মুহাম্মদের মৃত্যু কীভাবে হয়েছিল।
ইসলামের নবী মুহাম্মাদ অত্যান্ত কষ্ট পেয়ে মৃত্যুবরন করেন। নবীর প্রিয় স্ত্রী আয়েশাও বলেছেন, নবীর মৃত্যু যন্ত্রণা ছিল ভয়াবহ। এত কষ্টই নবী পেয়েছেন, যে আয়েশা এরপরে আর কারো মৃত্যু সহজ হতে দেখলে ইর্ষাকাতর হতেন না। মুহাম্মাদ মৃত্যুর প্রায় দুই বছর আগ থেকেই অসহ্য যন্ত্রনায় কাতরাতেন। মৃত্যুর কয়েক মাস পূর্বে এমন অবস্থা হয়েছিল যে তাঁকে দুজন মানুষের কাঁধে ভর করে চলতে হতো এবং তাঁর পা দুটো মাটির সাথে হেচরাতো। সহিহ হাদিস থেকে জানা যায়, অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় একদম নড়াচড়া করতে অসমর্থ থাকা নবী মুহাম্মদকে টেনে হিঁচড়ে আয়িশার ঘরে নেয়া হয়েছিল। এরকম অসুস্থ অবস্থায় সাধারণত রোগীদের নড়াচড়া করানো হয় না, কিন্তু আয়িশার পালা থাকায় উনাকে দুইজন সাহাবী প্রায় পা হিঁচড়ে আয়িশার ঘরে নিয়ে যান।
এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই যে, নবী মুহাম্মদকে আয়িশা এবং হাফসা, উমর ও আবু বকরের পরিকল্পনা মোতাবেক ঔষধের নামে বিষ খাইয়ে হত্যা করেন কিনা। নবীর পরিবারের কাছ থেকে সকল গনিমতের মাল হস্তগত করা এবং শাসন ক্ষমতা নিজেদের কাছে রাখার জন্য আবু বকর ও উমর এরকম পরিকল্পনা করে থাকলে অবাক হওয়ার মত কিছু থাকবে না। ইতিহাসে এরকম ঘটনা অসংখ্য। এরপরে একে একে আলী, হাসান হোসেনকেও হত্যা করা হয়। তাই নবীকে আয়িশা ও হাফসা মৃত্যুর সময়ে বিষ খাইয়েছিল কিনা, সেই বিষয়ে সন্দেহের কিছু অবকাশ থাকে। তবে এটি একেবারেই নিশ্চিত করে বলা যায় যে, নবী মুহাম্মদের মৃত্যু হয়েছিল বিষক্রিয়ায়, যা নবীর কথা থেকেই পরিষ্কার। একইসাথে, নবীর মৃত্যুও হয়েছিল অত্যন্ত নির্মমভাবে, প্রচণ্ড যন্ত্রনাভোগ এবং ধুঁকে ধুঁকে মরেছিল । একইসাথে, সেই ইহুদি নারী যে মুহাম্মদকে বিষ খাইয়েছিল, তার বিষ কাজ করেছিল বলেই পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়। এ থেকে কী প্রমাণ হয়, তা পাঠকদের উপরেই ছেড়ে দিচ্ছি।