মনের ভাইরাস
দ্য গড ডিল্যুশন বইয়ের লেখক, রিচার্ড ডকিন্স তার ১৯৭৬ সালে প্রকাশিত বই The Selfish Gene -এ তথ্যের একক বোঝাতে ‘মিম’ নামক শব্দ উদ্ভাবন করেন, যা অনেকটা জিনের মত, অথচ সাংস্কৃতিকভাবে বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয়। তিনি পরবর্তিতে তার রচিত Viruses of the Mind (বাংলা: মনের ভাইরাস) প্রবন্ধে মানব সংস্কৃতিতে ধর্মীয় ধ্যান-ধারণার বিদ্যমানতার কারণ ব্যাখ্যা করতে এই ধারণাটি ব্যবহার করেন। তাঁর মতে ধর্ম একপ্রকার ভাইরাস এবং জিনের মত; যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়াতে থাকে।
মনের ভাইরাস শীর্ষক পদদ্বয়ের সমালোচনা
ধার্মিক এবং নিধার্মিক উভয়ই ডকিন্সের মেমে তত্ত্বের সমালোচনা করেন। জন বোকার, ‘ঈশ্বর’ ও ‘ধর্মবিশ্বাস’ যে মনের ভাইরাস; ডকিন্সের এই ধারণার সমালোচনা করেন, এবং এই মত প্রকাশ করেন যে, ‘‘ধর্মীয় প্রেরণা নিয়ে ডকিন্স যে বিবরণ দিয়েছেন; তার সাথে… তথ্য-প্রমাণ ও উপাত্তের বিস্তর তফাৎ [রয়েছে]’’ এলাইস্টার ম্যাকগার্থ এই যুক্তি দেখানোর মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যে, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক গবেষণায় মিমের [ধারণার] কোন স্থান নেই’’, এধরণের [ধর্মীয়] ভাবনার বিস্তরণ [কোন] এলোমেলো উদ্দেশ্যহীন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে না, বরং স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ইচ্ছাকৃত কার্যকলাপের দ্বারা [সংঘটিত] হয়, ধ্যান-ধারণার বিবর্তন ডারউনীয় বিবর্তনের চেয়ে [বরং] অনেকটাই ল্যামার্কীয় [ধরনের], [এ বিষয়ে] কোনই প্রমাণ নেই যে, রোগবিস্তারবিদ্যা সংশ্লিষ্ট (Epidemiological) মডেলগুলো ধর্মীয় ধারণার বিস্তার ব্যাখ্যায় উপযোগী। এছাড়াও তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একটি জরিপকে উদ্ধৃতি করে বলেন, ইতোমধ্যে এটা দেখা গিয়েছে ধার্মিকরা তুলনামুলকভাবে বেশি সুখী হয়, যা থেকে এটাই অনুমিত হয়, ধর্ম কোনোভাবে ভাইরাসের সমতুল্য নয়।’’
মানসিক ভ্রম বা বিভ্রম
রিচার্ড ডকিন্স যুক্তি দেখান যে, ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে প্রায়শই বিভ্রমাত্মক আচরণ জড়িত থাকে।[৪২] আবার স্যাম হ্যারিসের মত অনেকেই, ধর্মকে মানসিক রোগের সাথে তুলনা করেন এবং বলেন যে, “এটি অন্যথায় সুস্থ্য-স্বাভাবিক মানুষকেও পবিত্র কর্মের অজুহাতে, অবাধে পাগলামী করার স্বীকৃতি দেয়।”
According to a retrospective study on Abraham, Moses, Jesus Christ, and the Apostle Paul, they may have had psychotic disorders that contributed inspiration for their revelations. They conclude that people with such disorders have had a monumental influence on civilization.
সাম্প্রতিককালে রহস্যময় আধ্যাত্ববাদী ঘটনাগুলোর রহস্যভেদের উদ্দেশ্যে অনেক মনস্তাত্ত্বিক গবেষণা হয়েছে এবং কিছু গবেষণায় রহস্যময় আধ্যাত্বিক অনুভূতি লাভ করা অনেক ‘অতীন্দ্রিয়বাদীর’ অনুভূতির সাথে শৈশবে শারীরিক, মানসিক বা যৌন নির্যাতনের স্বীকার হওয়ার যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গেছে। আরেক ধারার গবেষণায় গবেষক ক্লিফোর্ড এ. পিকওভার বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করেন, যেগুলো বিভিন্ন ধর্মীয় আধ্যাত্বিক বা অলৌকিক অনুভূতি (যেমন, প্রেতাত্বা ভর করা, দেবতা দর্শন, ঈশ্বর দর্শন, ঐশী নির্দেশ লাভ ইত্যাদি) লাভের সাথে মস্তিষ্কে পরিবর্তিত বৈদ্যুতিক কার্যকলাপের ফলে সৃষ্ট টেম্পোরাল লোব এপিলেপ্সির সম্ভাব্য যোগসূত্রের প্রতি ইঙ্গিত করে।
কার্ল সেগান, তার সর্বশেষ বই, The Demon-Haunted World: Science as a Candle in the Dark -এ অতীতের বিভিন্ন ধর্মীয় চরিত্রের অলৌকিক অভিজ্ঞতা লাভের সাথে আজকের দিনের UFO দেখতে পাওয়ার অভিজ্ঞতার তুলনা করেন। তার মতে, এই দুই ধরনের ঘটনারই উৎপত্তি হয় একই মানসিক ভারসাম্যহীনতা থেকে।