LGBTQ+ Opinion

সমকামীতাঃ পক্ষ বিপক্ষ অবস্থান

মোঃ আফজল হুসেন (রুবেল) ৪ই জুলাই, ২০২৫ অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত– সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ কারণে তাদের জন্যই মূলত এ লেখা। এটি আমার একান্তই ব্যক্তিগত মতামত। ট্রান্সজেন্ডার চারটি জিনিসের একটি। এর মূল হলো এলজিবিটি। সম্প্রতি আরেকটি অক্ষর যুক্ত হয়েছে। তা হলো কিউ। এল এর পূর্ণ রূপ লেসিবিয়ান। নারী নারীর সাথে যৌন কাজ করলে সেটা লেসবিয়ান। জি এর পূর্ণ রূপ গে। পুরুষ পুরুষের সাথে এ ধরণের সম্পর্কে লিপ্ত হলে তারা গে। বি তে বাই সেক্সুয়াল। এরা নারী পুরুষ উভয়ের সাথেই যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে। আর টিতে হলো ট্রান্স জেন্ডার। এরা অপারেশনের মাধ্যমে নারী থেকে পুরুষ ও পুরুষ থেকে নারীতে রূপান্তরিত হয়। আর কিউ হলো কোয়েশ্চেনিং। সমাজে যাদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এই এলজিবিটির পূর্ণ মানে দাড়ায়–নারী ও পুরুষ সমকামী, উভকামী ও রূপান্তরকামী।  এ বিষয় নিয়ে কথা বলার আগে আমার অবস্থানটা আগে পরিস্কার করি। আমি সাধারণত সংখ্যালঘুর পক্ষে থাকি। দুর্বলের পক্ষে থাকি। ফুটবল খেলায় যদি কোন দলকে না চিনি, তবে যারা দুর্বল তাদের পক্ষ নেই। সমর্থন দেই। সাংবাদিকতা করেছি বলে এরকম একটা মাইন্ড সেট তৈরি হয়েছে। ফিলিস্তিনের গাজা ইস্যুতে দেখতে পাবেন, ইহুদীরাও গাজার গণহত্যার বিরোধীতা করছে। তাদের শ্লোগান হলো– ডোন্ট কিল ইন মাই নেইম। ইহুদীদের নামে গণহত্যায় তারা বিক্ষু্ব্ধ হয়েছেন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য সুইেডনে প্রথম লিভে প্যালেস্টিনা গানটি গাওয়া হয়। পরবর্তীতে এই গানটি পুরা ইউরোপ আমেরিকার রাজপথ কাপাচ্ছে। এই মিছিলে মুসলমানের চেয়ে অমুসলিমদের সংখ্যা বেশি। তারা মুসলমানকে ভালোবেসে যে রাস্তায় নেমেছেন তা ভাবার কোন কারণ নেই। এরা বেশির ভাগ প্রথাবিরোধী মানুষ। তাদের ভিত্তি এটাই যে দুর্বলের পক্ষে দাড়াতে হবে। দেখবেন লেখক সাহিত্যিক শিল্পী সবাই মজলুমের পক্ষে থাকে। আপনি নিজেকে কতটুকু মানুষ দাবি করবেন তা কোনো বিষয়ে নিজের অবস্থানের ভিত্তিতে ধরে নিতে পারেন। সংখ্যাগরিষ্ঠরা শক্তিশালী হয়। কম সংখ্যকরা দূর্বল হয়। আমি দুর্বলের প্রতি পক্ষপাত। এই দুর্বল শুধু ধর্মীয় না; সামাজিক বা অর্থনৈতিকও। এ কারণেই আমি ভারতের মুসলমানদের পক্ষে কথা বলি। আর বাংলাদেশে হিন্দুদের পক্ষে কথা বলি। আমি অনেকাংশে প্রথাবিরোধি মানুষ।  এত কথা বলার উদ্দেশ্য কী! এবার পরিস্কার করি। এদেশে এলজিবিটি হাতে গোণা। নগন্য৷ বাংলাদেশের এরা এলজিবিটি কী–না;তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। কারণ বলা হয়–বাঙালিদের মধ্যে ট্যাবুর পরিমাণ এত বেশি যে, তারা খালেস নাস্তিকও হতে পারেনা। এলজিবিটির প্রতি আমার ব্যক্তিগত কোন বিদ্বেষ নেই। তারা সমাজে রাজনীতি ও অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারেন। তবে আমার মনে হয়, লেসবিয়ান, গে আর বাই সেক্সুয়ালিটি একটা মানসিক সমস্যা। ভালো সাইকোলজিক্যাল থেরাপি দিলে এদের ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা। তবে যারা চিকিৎসা উদ্ভাবন করবেন– তারা এটিকে উৎসাহিত করছে। ফলে এর চিকিৎসা ব্যবস্থা অনাবিস্কৃত রয়ে গেছে। যারা এর বিরোধীতা করেন– তার উদ্ভাবন তো দূরের কথা এরা উদ্ভাবনের উচ্ছিষ্টভোগী। তবে আমরা যাকে হিজড়া বলি তাদের সম্পর্কে ইসলামে একটি নীতি রয়েছে। কারো শরীরে নারীর চিহ্ন বেশি থাকলে তিনি নারীর মতো জীবন যাপন করবেন। আর পুরুষের চিহ্ণ বেশি থাকলে তিনি পুরুষ হিসেবে জীবন যাপন করবেন। কোরআনে এসেছে, “তাগিরু খালকিল্লাহ” আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করার কোন সুযোগ নাই। তবে কোন ব্যক্তির শরীর বেশিরভাগ নারীর মতো দেখতে হলে সে হরমোন প্রতিস্থাপন বা সাপ্লিমেন্ট করে নারী হতে চাইলে এক্ষেত্রে ইসলামি ধর্মবেত্তারা উদার হতে পারেন। তবে সম্পূর্ণ পুরুষ মানুষ অপারেশন করিয়ে নারী সাজবে ইসলামে এর কোন সুযোগ নাই। এদের সংখ্যা লঘু হিসেবে আমি বিবেচনা করিনা। প্রথাবিরোধী হয়েও এদের পক্ষ নিতে পারছিনা। দুঃখিত। তবে মানসিক রোগী বা সেক্স প্রতিবন্ধী হিসেবে তাদের প্রতি আমার সহানুভূতি রয়েছে।যাই হোক যেভাবে প্রতিযোগীতামূলক আর ব্যক্তি কেন্দ্রিক সমাজ ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে; তাতে কে ট্রান্সজেন্ডার হলো– কে গে বা লিসিবিয়ান আর কে রূপান্তরকামী তা নিয়ে মানুষের মাথা ঘামানোর সময় নেই। উচিতও নয়। এদেরকে কেউ আক্রমণও করেনা। যার যার রুচি নিয়ে সে বসবাস করবে। একজন পুরুষ অস্ত্রোপচার করে নারী হতেই পারেন। তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আল্লাহ আরেকজনকে জিজ্ঞাসা করবেননা– কেন অমুকে পুরুষ থেকে নারী হলো। তবে সমস্যাটা তখনি দাড়ায়, যখন এটাকে মহৎ একটি কাজ দেখিয়ে প্রচারণা চালানো হয়। এদেশে এরা মজলুম নয়। যে ব্যক্তি অস্ত্রোপচার করে নারীতে রূপান্তরিত হয়েছেন, এই সমাজে তার এমন কী অবদান! তার জন্য একটি পত্রিকায় এত জায়গা বরাদ্দ করে বড় করে ফিচার লিখতে হবে কেন! এ দেশে এর চেয়ে বড় বড় সমস্যা রয়েছে। দারিদ্রতা দূর করা যায়নি। চিকিৎসা ব্যবস্থার করুন হাল। সরকারি সেবা পেতে কী যে লাগে তা ভুক্তভোগীরাই বলতে পারেন। এদেশে নারীরা রাতের বেলায় একা রাস্তায় হেটে যেতে পারেনা। তাছাড়া এই সমাজে আড়ালে আবডালে চিরদিনই এসব ছিল। এমন আড়ালের জিনিসটা বের করে তাকে মহান হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে কেন? বুঝাই যাচ্ছে এর পেছনে সুদূরপ্রাসারী কোন চক্রান্ত রয়েছে। সমাজকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা চলছে। উন্নত দেশেও তাদের বিরুদ্ধে বিশাল বিক্ষোভ দেখেছি। তারাও বিষয়টা মেনে নেয়না। অথচ এদেশে এলজিবিটি গ্রহণযোগ্য করার জন্য টোপ ফেলা হচ্ছে। আবারো বলছি, যারা এলজিবিটি এরা সাধারণ কোন জীব না। আামাকে দিয়ে সম্ভব নয়। তার মানে তারা হয় অস্বাভাবিক বা মানসিকভাবে অসুস্থ, না হয় জীনগত সমস্যা। এরা থাকুক এদের মতো। তবে এজিবিটি নিয়ে যেসব গণমাধ্যম প্রচার প্রচারণা চালায়– তাদেরকে আমার এলজিবিটির অতি নিম্নমানের অরুচিকর কাস্টমার বলেই মনে হয়। এসব পত্র পত্রিকা থেকে সতর্ক থাকা উচিত। এদের বর্জন করা উচিত। 

LGBTQ+ Opinion

সমকামীদের আবার বিয়ে! এটাও কি সম্ভব?

মোঃ আফজল হুসেন (রুবেল) ৩১শে মে, ২০২৫ বেশ কয়েক বছর আগের কথা। তখন আমি অন্ধবিশ্বাসমুক্ত, এবং অনেকখানি সংস্কারমুক্তও বলা যায়। বাংলাদেশীদের গণ্ডি পেরিয়ে প্রচুর অবাঙালির সাথে আমার বন্ধুত্ব। তাদের সাথে চলছিল আমার সাংস্কৃতিক দেওয়া-নেওয়াও। তখন আমার বিদেশী বন্ধুদের যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের সঙ্গে দুইটা মেয়েকে দেখতাম সব সময়। বন্ধুবান্ধবদের অনুষ্ঠানাদিতে ওই ‘বিশেষ’ দুটি মেয়ের উপস্থিতি ও তাদের প্রতি অন্যান্য সবার স্বাভাবিক বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ আমার মনকে বিষিয়ে তুলতো। ওদের দেখলে আমার সমস্ত […]

Atheism in Bangladesh

নাস্তিকতা নিয়ে – ১০ টি অতিকথা -এবং ১০ টি সত্যসন্ধানী  বিশ্লেষণ

মোঃ আফজল হুসেন (রুবেল) ১৯ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪   নাস্তিক শব্দটা আজকে এদেশে পরিণত হয়েছে একটা জনপ্রিয় গালিতে। নাস্তিকদের সম্পর্কে প্রচলিত কিছু অতিকথন ব্যবহার করেই ধর্ম ব্যবসায়ী আর মৌলবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠী তাদের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মনকে বিষিয়ে তুলছে। অথচ অবিশ্বাসের দর্শন সম্পর্কে সঠিক ধারণা নাস্তিকতাকে এক প্রশংসনীয় জীবনদর্শন হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত করতে পারত আজকের বাংলাদেশে। এ ব্যাপারে গণসচেতনতা এবং মুক্ত আলাপ আলোচনাই নাস্তিকদের সম্পর্কে ভীতি আর বিরূপ মনোভাব দূর করতে পারে বলে আমার বিশ্বাস। লস এঞ্জেলেস টাইমসে ২০০৬ সালে […]

LGBTQ+ Opinion

সমকামিতা : ধারণা বনাম বাস্তবতা  

মোঃ আফজল হুসেন (রুবেল) ১২ই অগাস্ট, ২০২৪   বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও কিছু মানুষ নিজ লিঙ্গের মানুষকে যৌনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন। আপনি ভাবতে পারেন ভালোবাসা তো ভালোবাসাই- কিন্তু বিষয়টা কি এত সহজ?  ২০০১ সালে নেদারল্যান্ড প্রথম সমলিঙ্গের বিয়েকে আইনগত বৈধতা দেওয়ার পর তাদের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করেছে আরও দশটি জাতি। ২০১১ সালে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল ঐতিহাসিক একটি সনদ পাশ করে যেখানে আন্তঃসরকার বডি ‘‘এ মর্মে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, গোটা বিশ্বে যৌনজীবনের ভিন্নতা ও […]

LGBTQ+ Opinion

বাংলা সাহিত্যে সমকামিতা 

মোঃ আফজল হুসেন (রুবেল) ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ মন অতলান্ত। সেই মনের অতলে লুকিয়ে থাকে গুপ্ত ও সুপ্ত কামনা বাসনা। তবে মাত্রাভেদে ভিন্নতা তো আছেই। তার সঙ্গে যখন যুক্ত হয় শরীরের বিবিধ রসায়ন, তখনই সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায় একটি মানবরূপ। তৈরি হয় সম্পর্কের নানা রূপভেদ, যে সম্পর্ক নানা প্রকৃতির, নানা প্রবৃত্তির। কারণ বৈষ্ণবশাস্ত্র অনুযায়ী সব ভাবই বিবিধ রসাশ্রিত। এর মধ্যে মধুর ভাব থেকেই মুখ্যত আকর্ষণ বোধের জন্ম এবং নারী […]